অক্টোবরে কর্ণফুলী নদীতে বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধন
দেশের প্রথম নির্মাণাধীন টানেল 'বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল' আগামী ২৮ অক্টোবর উদ্বোধন করা হবে। পরদিন টানেলের ভেতরে যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। টানেলটি উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ লক্ষ্যে টানেলের দুই প্রান্তে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সেতু বিভাগের সচিব মো. মঞ্জুর হোসেন এ তথ্য জানান।
মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসের সম্মেলন কক্ষে টানেল উদ্বোধন উপলক্ষে এক প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সচিব মোঃ মঞ্জুর হোসেন। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন এ প্রস্তুতি সভার আয়োজন করে।
সেতু সচিব বলেন, 'বাংলাদেশে দক্ষিণ এশিয়ায় এই টানেল প্রথম। উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে ইতিহাসের অংশ হয়ে উঠছে চট্টগ্রাম। টানেল পার হতে সবাইকে টোল দিতে হয়। যারা জরুরী কাজে আছেন শুধুমাত্র তারাই এই টোল থেকে অব্যাহতি পাবেন। পাঁচ বছরের জন্য একটি বিদেশি কোম্পানিকে টানেলের ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
মঞ্জুর হোসেন বলেন, 'টানেলে জনসাধারণের জন্য গাইডেন্স সিস্টেম থাকবে এবং আটটি রেডিও চ্যানেলে স্বয়ংক্রিয় দিকনির্দেশনা থাকবে। টানেলের ভিতরে ফ্রিকোয়েন্সি নির্বিশেষে, যতক্ষণ গাড়ি টানেলে থাকবে ততক্ষণ এই নির্দেশিকা স্বয়ংক্রিয় হবে।'
তিনি বলেন, 'টানেল দিয়ে মোটরসাইকেল ও ইজিবাইক চলাচল করতে পারবে না। ঠিক করা হয়েছে কোন গাড়ি চলবে। কোন যানবাহন থেকে কত টোল নেওয়া হবে তাও নির্ধারণ করা হয়েছে। টানেলে ঘণ্টায় 80 কিলোমিটার বেগে যানবাহন চলাচল করবে। নিরাপত্তার জন্য দুই পাশে পুলিশ ফাঁড়ি ও ফায়ার সার্ভিস স্টেশন থাকবে।
সচিব বলেন, 'কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল চালুর মধ্য দিয়ে আনোয়ারা উপজেলা শহর থেকে শহরে পরিণত হচ্ছে। পর্যটন, শিল্পের প্রসার ঘটছে, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হচ্ছে।
বিভাগীয় কমিশনার মোঃ তোফায়েল ইসলাম বলেন, টানেল প্রকল্পটি বাংলাদেশে প্রথম। এটা নিয়ে মিথ্যা বা নেতিবাচক প্রচার হতে পারে। এ বিষয়ে সবাইকে সচেতন হতে হবে। মিথ্যা ও নেতিবাচক প্রচারণা চালালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবস্থা নেবে।
প্রকল্প পরিচালক হারুন উর রশিদ বলেন, 'যান চলাচলের জন্য টানেলটি সম্পূর্ণ প্রস্তুত। নিরাপত্তা বিশদ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুরো প্রকল্পের অগ্রগতি ৯৮ দশমিক ৫০ শতাংশ। আশা করছি ডিসেম্বরের মধ্যে পুরো কাজ শেষ হবে। এর মধ্যে উদ্বোধন হলেও কাজ এগিয়ে নিতে কোনো সমস্যা হবে না।
ঠিকাদার হিসেবে কাজ করছে চীনের চায়না কমিউনিকেশনস, কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড (সিসিসিএল)। বর্তমানে যান্ত্রিক ও বৈদ্যুতিক (ইলেকট্রো মেকানিক্যাল) কাজ চলছে। টানেল নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ১০ হাজার ৬৮৯ কোটি টাকা। শহরের পতেঙ্গা ও আনোয়ারা উপজেলার মধ্যে 5.35 কিলোমিটার দীর্ঘ সংযোগ সড়ক রয়েছে। এর কাজ শেষ।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, টানেল উদ্বোধন অনুষ্ঠানকে স্মরণীয় করে রাখতে নানা কর্মসূচি নেওয়া হবে। উদ্বোধনের দিন আনোয়ারা প্রান্তে একটি শান্তিপূর্ণ সমাবেশ হওয়ার কথা রয়েছে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৈঠকে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান, চট্টগ্রামের ডিআইজি নূরে আলম মিনা, সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
No comments:
Post a Comment